1. 01404006688bd@gmail.com : জুলিয়া জাহান : জুলিয়া জাহান
  2. mdaloar1986@gmail.com : মইনুল ইসলাম : মইনুল ইসলাম
  3. admin@nondito.tv : admin :
শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন

ঈশ্বরদীতে হিমাগারের আলুতে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বড় লোকসান

বাঁধন হোসাইন, পাবনা
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৭ বার পঠিত

মূল্য কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ঈশ্বরদীর কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। হিমাগারে মজুত রাখা আলু এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুচরা বাজারে আলুর দাম কমে বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকায়। অথচ গত বছরে দাম ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। মৌসুমের শেষ ভাগেও দাম না বাড়ায় আশাভঙ্গ হয়েছে চাষি ও ব্যবসায়ীদের। একই সাথে হিমাগার মালিকরাও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়, কারণ অধিকাংশ কৃষক ও ব্যবসায়ী হিমাগার থেকে আলু তুলতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আলু উৎপাদনে কেজি প্রতি খরচ পড়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। বর্তমানে পাইকারি বাজারে আলুর কেজি ১৩ টাকা। হিমাগারে বাছাইয়ের পর বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা। বাছাই ছাড়া সরাসরি ৯-১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অথচ হিমাগারে রাখা, বস্তা, ভাড়া ও অন্যান্য খরচ যোগ করে খরচ ২৬-২৮ টাকার বেশি দাঁড়িয়েছে।

লাভের আশায় শত শত মণ আলু ঈশ্বরদী হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। হিমাগারে রাখা আলু বিক্রি করতে এখন লাখ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে। হিমাগারে সংরক্ষণের সময়ও ফুরিয়ে আসছে। কিন্তু দাম বাড়ার লক্ষণ নেই। এতে সংরক্ষণকারীরা উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। গত মার্চ মাস থেকে সংরক্ষণ করা আলু এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, বিগত মৌসুমে আলুর উৎপাদন হয়েছিল চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম ছিল তুলনামূলক কম। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে দাম বাড়ার আশায় আলু কিনে হিমাগারে রাখেন। কিন্তু আলুর দাম না বাড়ায় হিমাগারের আলু বেঁচে পুঁজি উঠছে না।

ঈশ্বরদী আলহাজ্ব আহম্মদ আলী হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৬৫ হাজার বস্তা বা প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টন। বাণিজ্যিকভাবে এখানে কম আলু উৎপাদন হলেও দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা আলু এনে সংরক্ষণ করেন। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) হিমাগার ঘুরে দেখা যায়, হিমাগারে এখনও হাজার হাজার বস্তা আলু মজুদ রয়েছে। কিছু আলুতে পচনও ধরেছে। শ্রমিকরা বাছাই ও স্থানান্তরের কাজে ব্যস্ত। নারী শ্রমিকরা আলু পরিষ্কার করছেন।

ঈশ্বরদীতে আলু উৎপাদন কম হলেও ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নাটোর, রাজশাহী ও বাঘা এলাকার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা এখানে আলু সংরক্ষণ করে থাকেন। এরআগে সরকার হিমাগার গেটে প্রতি কেজি আলুর দাম ২২ টাকা নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করেছিল। এখনও তারা সরকার থেকে কোনো সুসংবাদের অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু তার প্রতিফলন দেখা যায়নি বলে রুহুল আমিন জানিয়েছেন।

স্থানীয় আড়তদার সঞ্জয় সরকার জানান, তিনি আট গাড়ি আলু কিনে হিমাগারে রেখেছিলেন। মোট খরচ পড়েছে ২৬-২৭ টাকা কেজি। আশা ছিল, গতবারের মতো না হলেও ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। বিনিয়োগের অর্ধেক দামেও বিক্রি হচ্ছে না। লোকসানে বেচতে হচ্ছে। আমার মতো সকলেরই বড় ক্ষতি হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

হিমাগার মালিকরা আশঙ্কা করছেন, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নতুন আলুর চাষ শুরু হলে ৬০ দিনের মধ্যে তা বাজারে উঠবে। তখন পুরোনো আলু বিক্রি হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নভেম্বর বা অতিরিক্ত ডিসেম্বরের পরে আলু রাখা সম্ভব হবে না। বারবার তাগাদা দিলেও লোকসানের ভয়ে কৃষক-ব্যবসায়ীরা আলু তুলতে আসছেন না। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি হিমাগার মালিকরাও বিপাকে পড়বেন।

হিমাগারের ম্যানেজার রুহুল ইসলাম মন্টু বলেন, আমাদের হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ৬৫ হাজার বস্তা। এবারে ৬০ হাজার বস্তা মজুদ ছিল। প্রতি বছর এ সময়ের মধ্যে চার ভাগের তিন ভাগ আলু বেচা হয়ে যায়। কিন্তু এবারে অর্ধেকও হয়নি। তিনি জানান, ৬০ হাজার বস্তার মধ্যে এখনো ৩৫ হাজার বস্তা আলু হিমাগারে রয়েছে। মাত্র ২৫ হাজার বস্তা বের হয়েছে। এবারের মতো পরিস্থিতিতে কখনো পড়িনি। আলু বেচে অনেকে বিনিয়োগের অর্ধেক টাকাও ফিরে পাচ্ছেন না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
All rights reserved © 2019
Design By Raytahost