বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) মাকিন এন্টারপ্রাইজ ও ইশতিয়াক সলিউশন নামের দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের বিল উঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজা শরীফ-এর। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে একটি ছবি ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় যে মাকীন এন্টারপ্রাইজের একটি বিল রেজা শরীফ স্বাক্ষর করে তুলে নিয়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের অফিসের ওয়াশরুম এবং তৃতীয় তলার কয়েকটি রুম মেরামতের জন্য মেসার্স মাকীন ট্রেডার্সের নামে প্রায় ২২ লাখ ৫ হাজার ৫৩৭ টাকা-র একটি বিল পাশ করানো হয়েছিল। ভাইরাল হওয়া ছবিতে প্রথমে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিল দেখা যায়নি, তবে পরে জানা যায় সেখানে মাকীন ট্রেডার্সের সিল দেওয়া ছিল।
অন্যদিকে ইশতিয়াক সলিউশনের ৫৩ হাজার ১৯টাকার একটি বিল উঠিয়ে নিয়েছেন। বিলে দেখা যায় কবি সুফিয়া কামাল হলের রিডিং রুমের থাই পর্টিশন গ্লাসের কাজের বিল তিনি উত্তোলন করে নিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, এইসব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ব্যবহার করে ছাত্রদলের ববি শাখার এই সাবেক সভাপতি নিজে কাজ করেন।
এমএস মাকীন ট্রেডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মুরশিদ আবেদীনের নিজের ভাইপোর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মুরশিদ আবেদীনের ভাইপোর নামে থাকলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন উপ-প্রধান প্রকৌশলী নিজেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের একাধিক সূত্র বিষয়গুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে রেজা শরীফ বলেন, “মেসার্স মাকিন ট্রেডার্সের মালিক মাকিন ভাই যুবদলের এক বড় ভাই।ভাই আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, অর্থ দপ্তরে তার একটি চেক আছে।আমি ক্যাম্পাসে থাকলে যেন সেটি রিসিভ করে সন্ধ্যায় তার কাছে পৌঁছে দিই। তিনি অর্থ দপ্তরেও ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে দেন। সে অনুযায়ী আমি চেকটি রিসিভ করি। সিলের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে আমার কাছে সিল ছিল না, তাই স্বাক্ষর করে পরে সিল এনে দিয়েছি।’ ”
এবিষয়ে ববি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজা শরীফ বলেন, আমি সেদিন ক্যাম্পাসে ছিলাম মেসার্স মাকিন ট্রেডার্সের ভাই আমাকে কল দিয়ে বললেন, আমি ক্যাম্পাসে থাকলে অর্থ দপ্তরে তার একটি চেক আছে। আমি যেনো একটা রিসিভ করে। সন্ধ্যায় তার কাছে পৌছে দেয়। ভাই অর্থ দপ্তরে কল দিয়ে বলে দিছে।সেইভাবে আমি চেকটা রিসিভ করেছি। আর সিলের বিষয়ে তৎক্ষনাৎ আমার কাছে সিল ছিল না,তাই সাক্ষার করে পরে সিল এনে দিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দপ্তরের প্রধান আতিকুর রহমান বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান যদি কাউকে পাঠিয়ে চেক দিয়ে দিতে বলে, তবে তারা সিল ও স্বাক্ষর রেখে এবং ফোন করে নিশ্চিত হয়েই চেক হস্তান্তর করেন।
প্রকৌশলী উপ-প্রধান মুরশিদ আবেদিন বলেন, তাদের কাজ শুধুমাত্র বিল তৈরি করে অর্থ দপ্তরে পাঠানো। কে চেক তুলছে, সেটা তাদের দেখার বিষয় নয়। তিনি আরও নিশ্চিত করেছেন যে মাকিন ট্রেডার্স রেজা শরীফের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নয়।
Leave a Reply