ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের মজলিসে শুরার সদস্য মেজবাহ উদ্দিন সাইদ বলেছেন, ডাকসু নির্বাচনে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতির বিরুদ্ধে তার দেয়া মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে তিনি অন্তু বা হেফত মনে করছেন না — সরি বলতেও তার কোনো অসুবিধা নেই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দাগনভুড়ার আতাতুর্ক স্কুল মার্কেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।
ঘটনাটি ফের স্মরণ করিয়ে দিই—গত মঙ্গলবার ডাকসু নির্বাচনের দিন উপাচার্যকে কেন্দ্র করে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহসী আচরণ দেখালে মেজবাহ উদ্দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট শেয়ার করেন। পোস্টে তিনি কঠোর ভাষায় লিখেছিলেন, ‘ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতির এত বড় স্পর্ধা হয় কী করে… বেয়াদবি কিন্তু ছুটায় দেব’—এরকম তীব্র কথাবার্তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তৎক্ষণাৎ সমালোচনার ঝড় ওঠে।
সাংবাদিকদের সামনে মেজবাহ আজ বলেন, তার ভাষা ‘কঠিন’ ছিল এবং ‘ভাষা নরম হলে আরও ভালো হতো’। তিনি একথাও বলেন—বয়েস যদি কম থাকত তাহলে হয়তো আরও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাতেন। তবু ব্যক্তিগতভাবে তিনি অনুতাপ প্রকাশ করতে চান না: “এই মন্তব্যের জন্য সরি বলতেও অসুবিধা নাই,”—বললেন মেজবাহ।
তিনি আরও দাবি করেছেন, তিনি কেবল একজন ব্যক্তি হিসেবে প্রতিবাদ করেছেন; অনেকে একই রকম বা এর চেয়েও কড়াভাবে প্রতিবাদ করেছেন। মেজবাহ বলেন, “সারজিস আলম ইভেন আরও বড় বড় নেতা করেছে,” এবং যোগ করেন, উপস্থিত ছিলেন তারা; সেখানে ছাত্রদলের সভাপতি–সম্পাদকও ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি—এই প্রসঙ্গ তুলে ঘটনার সার্বিক প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
এক পর্যায়ে মেজবাহ বলেন, রাজনীতির এই তিক্ততায় ভোগ না করেই তারা রাজনীতির বাইরে সরে আসার কথাও ভাবছেন—এ প্রসঙ্গে তিনি ৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করেন। তিনি নিজেকে জামায়াতে ইসলামীর রোকন পরিচয়ে দাবি করে বলেন, দাগনভুঞায় দীর্ঘদিন (৮৮ সাল থেকে) রাজনীতি করছেন এবং ২২ বছর ধরে জামায়াতে ইসলামীতার সঙ্গে জড়িত।
জানতে চাওয়া হলে মেজবাহ সামাজিক মাধ্যমে তাকে টার্গেট করা এবং নানাজনকে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ বলার অভিযোগ তো করেন। তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যারা লিখেছে, তাদের অনেকের বয়সও ২২ বছরের কম; তবু তিনি তাদের ‘ছোট ভাই, ভাতিজা, ছেলে’ হিসেবে দেখেন এবং তেমন আক্রোশ প্রকাশ করেননি। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেছেন।
এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়-ভিত্তিক রাজনীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত আপত্তিকর মন্তব্য—এসব নিয়েও নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্যাম্পাস রাজনীতিতে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও সোশ্যাল মিডিয়া উত্তেজনা প্রতিহত করতে নেতাদের জবাবদিহি ও শালীন ভাষা অনুসরণ করা উচিত।
Leave a Reply