জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করে। তবে ওই বাসগুলোতে ‘সার্বিক সহযোগিতায় জাককানইবি শাখা ছাত্রশিবির’ লেখা স্টিকার দেখা যায়, যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আগারগাঁওগামী দুই রুটে মোট ছয়টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় নজরুল ভাস্কর্যের সামনে থেকে বাসগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরিবহন সুবিধার জন্য প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রশাসনের কাছে আবেদনপত্র জমা দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরও একই বিষয়ে আবেদন জানায় এবং পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত, সিট পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের কাজে সহযোগিতা করে।
তবে পরীক্ষার দিন ভোরে বাসের গায়ে ‘সার্বিক সহযোগিতায় জাককানইবি শাখা ছাত্রশিবির’ লেখা স্টিকার লাগানো দেখা যায়, যা শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপসহ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন প্রধান বলেন,‘সবাই জানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগেই এই পরিবহন সেবা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি বাসে নির্দিষ্ট একটি সংগঠনের স্টিকার লাগানো দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সবাই বিব্রত হয়েছেন।’
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদ কবির বলেন,‘মূলত প্রশাসনই এই পরিবহন সেবাটা নিশ্চিত করেছে। আমরা শুধু সহযোগিতা করেছি। আবেদন জমা দেওয়ার পর ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আর কোনো সহযোগিতা আসেনি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা জানাতেই স্টিকার লাগানো হয়েছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় আমরা দ্রুত স্টিকার তুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আহমেদ শাকিল হাসমী বলেন,‘প্রতিবারের মতো এবারও বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেই পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাত্রশিবির পরীক্ষার্থীদের তালিকা তৈরিতে সহায়তা করেছে এবং ছাত্রদল আবেদন জমা দেয়। তবে বাসে সংগঠনের স্টিকার লাগানো একেবারেই অনুচিত। বিষয়টি নজরে আসার পর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মতে, শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহায়তার উদ্যোগটি প্রশংসনীয় হলেও সরকারি সম্পত্তিতে রাজনৈতিক সংগঠনের নাম ব্যবহার করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
Leave a Reply