বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আমরা ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য লড়াই করেছি। বিএনপি একটি পরীক্ষিত রাজনৈতিক দল। কারও জন্য অপেক্ষা নয়, দেশে নির্বাচনী ট্রেন এখন লাইনে উঠে গেছে। নেতাকর্মীদের ভোটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।”
শনিবার বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট স্কুল মাঠে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ. স. ম. হান্নান শাহ-এর নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন, আর সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা।
ফখরুল বলেন, “নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় মানুষ আনন্দিত, কারণ এখন দেশে জনপ্রতিনিধি নেই, দেশ চালাচ্ছেন কেবল আমলারা। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিরাই দেশ চালাবে—এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
তিনি বলেন, “অপশক্তি জনতার প্রতিরোধে পালিয়েছে। এখন মনে হচ্ছে, আমরা নতুন করে স্বাধীনতা পেয়েছি। হাসিনার সময় ঘরে ঘুমানো যায়নি, মানুষ আতঙ্কে ছিল। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশে স্বস্তি ফিরছে। তিনি প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনছেন।”
ফখরুল আরও বলেন, “ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। বিএনপি সংস্কারের জন্মদাতা, আমাদের শেখানোর কিছু নেই। তারেক রহমানের ৩১ দফায় সংস্কারের সব দিকই অন্তর্ভুক্ত।”
বিএনপি মহাসচিব শেখ মুজিবুর রহমানের একদলীয় শাসনের সমালোচনা করে বলেন, “৭৫ সালে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলেন শেখ মুজিব। কিন্তু শহীদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “হাসিনার আমলে বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ২০ হাজার মানুষ হত্যা, অসংখ্য গুম ও নির্যাতন হয়েছে। আজ যারা আমাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, তারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। ভারত আমাদের বন্ধু নয়, তারা সীমান্তে মানুষ হত্যা করছে, পানির ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে।”
নারীর ক্ষমতায়নে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার অবদান উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, “জিয়া নারীদের স্বাধীনতা দিয়েছেন, মহিলা সংস্থা গঠন করেছেন, আর বেগম খালেদা জিয়া মেয়েদের দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ দিয়েছেন। এর ফলেই আজ দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।”
শেষে প্রয়াত হান্নান শাহ সম্পর্কে তিনি বলেন, “হান্নান শাহ ছিলেন অকৃত্রিম দেশপ্রেমিক, যিনি দলের দুঃসময়ে হাল ধরেছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আদর্শে জীবন উৎসর্গ করেছেন।”
স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন—হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা ড. এম এ কাইয়ুম ও হুমায়ুন কবির খান।
Leave a Reply