আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠনের পর যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে বা জনপ্রতিনিধির পদে বহাল থাকতে পারবেন না—এমন কঠোর বিধান যুক্ত হলো আইনে। সোমবার (৬ অক্টোবর) রাতে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (তৃতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এর ফলে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভোটে অংশ নেওয়ার সব সুযোগ বন্ধ হয়ে গেল।
১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে এতে ২০(সি) ধারা যুক্ত করা হয়েছে। নতুন এই ধারায় বলা হয়েছে—আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বা বহাল থাকার অযোগ্য হবেন। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মেয়র, চেয়ারম্যান বা কমিশনার হিসেবেও নির্বাচিত হওয়ার বা দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা হারাবেন।
এছাড়া তিনি কোনো সরকারি চাকরিতে বা রাষ্ট্রের অন্য কোনো পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না। তবে যদি ট্রাইব্যুনালের রায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি খালাস পান, তাহলে তার অযোগ্যতা উঠিয়ে দেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “যে কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত থাকলে বিচারাধীন অবস্থায় রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকা নৈতিক ও আইনি উভয় দিক থেকেই অনুচিত—এই কারণেই সংশোধন আনা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। তার সরকারের একাধিক মন্ত্রী, এমপি ও শীর্ষ নেতারা বর্তমানে কারাগারে বা আত্মগোপনে আছেন। তাদের অনেকে বিভিন্ন হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গঠিত ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও একটি মামলার বিচার এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
Leave a Reply