জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বা জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হওয়ার ৩৭ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও ঘোষণা করা হয়নি চূড়ান্ত ফলাফল। শনিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত ২১টি হলের মধ্যে মাত্র ১২টি হলে ভোট গণনা শেষ হয়েছে। কমিশন সূত্রে ধারণা করা হচ্ছে, দুপুর নাগাদ পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা করা হতে পারে।
এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক এবং জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম জাবি শাখার সভাপতি। শুক্রবার রাতে নতুন কলা ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন ব্যবস্থা ও ব্যর্থতার দায়ভার আমি নিতে চাই না। সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না। ভোট মেশিনের মাধ্যমে গণনা করার সিদ্ধান্ত ছিল, কিন্তু তা না করে ম্যানুয়ালি গণনা করা হয়েছে, যা বড় ধরনের অনিয়ম।”
তিনি আরও জানান, লিখিতভাবে কমিশনকে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি, বরং পদত্যাগ না করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। তবে বিবেকের তাড়নায় তিনি পদত্যাগের পথ বেছে নিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি পরিষ্কার করে বলেন, তিনি বিএনপির সঙ্গে জড়িত নন, তবে একটি নির্দিষ্ট আদর্শে বিশ্বাসী।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে প্রায় ৬৭ থেকে ৬৮ শতাংশ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ভোট গণনা শুরু হলেও এত দীর্ঘ সময় পরও পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্থিরতা বাড়ছে। অনেকে অভিযোগ করছেন, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের কারণে স্বচ্ছতার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা ভেস্তে গেছে।
ফলাফল ঘোষণায় দীর্ঘসূত্রিতা এবং কমিশনের ভেতরের বিভক্তি নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে পুরো নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই ধীরগতি গণনা শুধু নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা কমাচ্ছে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকেও অস্থিতিশীল করে তুলছে। এখন দেখার বিষয়, কমিশন কীভাবে এই সংকট কাটিয়ে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে পারে।
Leave a Reply